শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন
জাতিগত দ্বন্দ্ব আর আন্তর্জাতিক কূটচালে পড়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে সিরিয়া। দশ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে সে দেশের মানুষে স্বাভাবিক জীবন। তিউনিসিয়ায় শুরু হওয়া আরব বসন্তের ঢেউ সংক্রমিত হয়ে লিবিয়া, মিসর, ইয়েমেন থেকে ছড়িয়ে পড়ে সিরিয়াসহ আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ২০১১ সালের মধ্যভাগে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা সিরিয়াজুড়ে।
প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে লাগিয়ে দেন। আরব বসন্তের বিক্ষোভ রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘাতে। পরে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। যা পরবর্তীতে অনেক জটিল আকার ধারণ করে। এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে ইরান, ইসরায়েল, লেবানন, তুরস্ক, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের মতো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শক্তি। সন্ত্রাস দমনের নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক জনগণের উপর হামলা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না সে দেশের জনগণ।
বাসার আল আসাদ এখনো ক্ষমতায়। একসময় একনায়কতন্ত্র-স্বৈরশাসন থেকে মুক্তির জন্য যারা রাজপথে নেমেছিল তারা আজ গণতন্ত্র চাওয়ার মূল্য দিচ্ছে। বিভীষিকায় রূপ নিয়েছে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ। অবর্ণনীয় পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে সে দেশের জনগনকে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ প্রভাবে মাথাচড়া দিয়ে উঠে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট। তারা ইরাক ও সিরিয়ার একটা বড় অংশ দখল করে নেয়। বর্বরতা-নৃশংসতা দিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের কেন্দ্রে চলে আসে তারা। একসময় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার পাশাপাশি সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অভিযানে পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা।
বর্তমান সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত যুদ্ধক্ষেত্র সিরিয়া। চলমান গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ থেকে ৬ লাখ মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক জনগণ। মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে।
Leave a Reply